ডঃ আব্দুল কালাম ও গীতা
একদিন চেন্নাইয়ের সাগর ত্বটে বসে, ধুতি ও শাল পরিহিত একজন ভদ্রলোক আপন মনে *ভাগবত গীতা* পড়ছিলেন।
সেই সময় সেখানে একটি ছেলে এসে তাঁকে বলল: "আজ এই বিজ্ঞানের যুগে এখনো আপনি এমন একটি বই পড়েন? দেখুন, এই মুহূর্তে আমরা চাঁদে পৌঁছে গেছি। আর আপনি কিনা এই গীতা, রামায়ণে আটকে আছেন।"
ভদ্রলোক ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করলেন: "গীতা সম্পর্কে তুমি কি জানো ?"
ছেলেটি এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বেশ উত্তেজিত হয়ে বললঃ "ওই সব পড়ে কি হবে। আমি বিক্রম সারাভাই গবেষণা ইনস্টিটিউটের একজন ছাত্র, আমি একজন বিজ্ঞানসাধক... এই গীতা পাঠ নিরর্থক।"
ভদ্রলোক ছেলেটির কথা গুলো শুনে হাসতে লাগলেন। ঠিক তখনই দুটি বিশাল গাড়ি সেখানে এসে দাঁড়ালো। একটা গাড়ি থেকে কিছু কালো পোশাক পরিহিত কমান্ডো এবং অপর গাড়িটি থেকে একজন সৈনিকের বেশে নেমে এল। সেই সৈনিকের বেশে লোকটি গাড়িটির পিছনে দরজা খুলে দিয়ে একটা সেলুট ঠুকে গাড়ির দরজার পাশে দাঁড়ালো। যে ভদ্রলোক গীতা পাঠ করছিলেন, তিনি এবার চুপ করে ধীর গতিতে গাড়িতে গিয়ে উঠে বসেলেন।
এই সব দেখে ছেলেটি হতভম্ব হয়ে গেল। ভাবল লোকটি কে জানতেই হবে। হাতের কাছে কাউকে না পেয়ে, সেই ছেলেটি নিজেই দৌড়ে গিয়ে সরাসরি তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, "স্যার... স্যার... কে আপনি?"
ভদ্রলোক খুব শান্ত গলায় বললেনঃ "আমিই বিক্রম সারাভাই।"
ছেলেটা যেন ৪৪০ ভোল্টের শক খেলো।
এই ছেলেটি কে ছিলেন জানেন ?
ড: আব্দুল কালাম।
এর পরই ডঃ কালাম *ভাগবত গীতা* পড়েন। পড়েন রামায়ন, মহাভারত, বেদ, উপনিষদ ইত্যাদি গ্রন্থ। আর এই গীতা পড়ার ফলেই নাকি ড: কালাম আজীবন মাংস না খাওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন। তিনি তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন , গীতা একটি মহাবিজ্ঞান । গীতা, রামায়ন, মহাভারত ভারতীয়দের নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি মহান গর্বিত সাধনা ।।
0 Comments