শ্রীপাদ নারু গোপাল প্রভুর মহিমান্বিত জীবনী 

হরেকৃষ্ণ সকলকে জানাই কৃষ্ণ প্রীতি ও শুভেচ্ছা। আজ আমার জীবনের এক মহান ব্যক্তি আমার পিতাসম আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষাগুরু শ্রীপাদ নারু গোপাল প্রভুর জীবনী ব্যাক্ত করার চেষ্টা করব 


শ্রীপাদ নারু গোপাল প্রভু হচ্ছেন ইসকনের তিনজন প্রধান জিবিসির (শ্রীল জয়পতাকা স্বামী গুরুমহারাজ , শ্রীল ভক্তিচারু স্বামী গুরুমহারাজ , শ্রীল ভক্তি পুরুষোত্তম স্বামী মহারাজ ) প্রতিনিধি।

শ্রীপাদ নারু গোপাল প্রভু ১৯৭৩ সালে ভারতে পশ্চিম বঙ্গের প্রবিত্র গঙ্গা সাগর এলাকায়(যেখানে কপিল মুনির আশ্রম আছে) বৈষ্ণব পরিবারে (আমাদের প্রতি কৃপা বর্ষন করতে )জন্মগ্রহণ করেন । 

তিনি মাত্র দশ বছর বয়সে একদিন মায়াপুর সংকীর্তন প্রচার বিভাগের ভগবত দর্শন পত্রিকায় মায়াপুর মন্দিরের গুরুকূলের ছবি দেখে আকর্ষিত হয়ে তিনি মায়াপুর ইসকন মন্দিরে আসার বায়না ধরেন তার বাবার কাছে । পরে তার বাবা তাকে মায়াপুরে নিয়ে আসেন । মায়াপুরের সৌন্দর্য দেখে , মায়াপুরের ভক্তদের দর্শন করে , মায়াপুরের প্রবিত্র মাটি স্পর্শ করে তার মধ্যে কৃষ্ণ প্রেম জাগরিত হয় । তখন উনি চিন্তা করেন : আমি আর বাড়িতে ফিরে যাব না । তখন তিনি তার ইচ্ছা তার পিতার কাছে ব্যাক্ত করলেন । তখন (১৯৮৩ সালে) তিনি মায়াপুর গুরুকূলে যোগদান করেন ।

১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৩ বছর তিনি গুরুকূলের শিক্ষা গ্রহণ করেন । 

গুরুকূলে থাকাকালীন সময়ে তার অনেক মহিমান্বিত লীলা তিনি প্রায় তার ভার্চুয়াল ক্লাসে বলেন । তার মধ্যে শ্রীপাদ নারু গোপাল প্রভুর শ্রীমুখ থেকে বলা কিছু লীলা এখানে দেওয়া হলো ;


***:; আমার মনে আছে,আমার বয়স যখন ১৪/১৫ বছর..তখন গুরুমহারাজ (জয়পতাকা স্বামী গুরুমহারাজ) গুরুকুলে এসেছিলেন, তখন গুরুমহারাজ গুরুকুলে আসতেন, water pollow খেলতে,(water pollow হচ্ছে football style এ জলের মধ্যে খেলতে হয় আরকি),তো গুরুমহারাজ মাঝে মাঝে আসছেন,ছেলেদের সাথে water pollow খেলতে...

তো উনি এসেছেন, water pollow খেলেছেন, প্রসাদ পেয়েছেন,..তো প্রসাদ পাওয়ার পর গুরুমহারাজ মাটিতে একটি চাদর বিছিয়ে শুয়ে পড়লেন..তো আমি ভাবলাম এইটা একটা বড় সুযোগ,গুরুমহারাজের পদসেবা করার..কিন্তু আমি তো জানতাম ই না,কিভাবে পদসেবা করতে হয়.. তো আমি গুরুমহারাজের চরণে ভুল জায়গায়,ভুল ভাবে আমার যতটুকু শক্তি ছিলো তা দিয়ে চাপ দিয়ে দিয়েছি,..গুরুমহারাজ বল্লেন, "আহ!"..মানে ব্যাথা পেয়েছে..তো আমি ভাবলাম হয়তো ব্যাথা পেয়েছে..তো চরণের আরেক জায়গায় আমি আবার ভুল করে চেপে দিয়েছি..তখন গুরুমহারাজ চিৎকার করে উঠেছেন," তুমি কি করছো"..? "তুমি কি করছো"..? তখন আমি বল্লাম,সরি গুরুমহারাজ, আমার ভুল হয়ে গেছে..ক্ষমা করবেন


..আরেকবার গুরুমহারাজ water pollow থেকে উঠে এসেছে,আর আমি শরবত করে নিয়ে এসেছি, .আমিতো শরবত করতে জানি না,তো 

চিনি বেশি দিয়েছিলাম.....যেহেতু water pollow থেকে এসেছে,তো গুরুমহারাজ দেখছে যে, lemon juice, তো গুরুমহারাজ খাওয়া শুরু করে দিয়েছে...কিন্তু শরবতটা ঠিক ছিলো না..তো গুরুমহারাজ খেয়ে চুপ করে ছিল । আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমার সেবায় ত্রুটি ছিল তখন গুরুমহারাজ বলছিলেন । এরপর শরবতে গুড় দেবে চিনি দেবে না । পরে আরেকবার গুরুমহারাজ এসেছিলেন। তখন তো আমাদের গুরুকূলে খুব কড়াকড়ি নিয়ম ছিল । তখন আমি গুড় খুঁজে পাইনি । তাই আবার বেশি করে চিনি দিয়ে নিয়ে এসেছি । বলছে ,," কি এইটা,,তুমি এইটা কি বানিয়েছো.."? তো ওইটা অনুকূল সেবা ছিলো না...

তো এইভাবেই আমরা ভাবছি যে,আমরা বিরাট সেবা করছি,কিন্তু সেইটা কি অনুকূল সেবা হচ্ছে, কৃষ্ণ কি এতে খুশি হচ্ছেন,সেইটা দেখার বিষয়...

—শ্রীপাদ নাড়ুগোপাল দাস প্রভু (জপক্লাস,২৫-০৫ ২০২১ )

১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ১৩ বছর গুরুকূলের শিক্ষা গ্রহণ সমাপ্ত করেন 

১৯৯৭ এবং ১৯৯৮ সাল এই ২ বছর তিনি শ্রীমৎ ভক্তি পুরুষোত্তম স্বামী মহারাজের সাথে ইউরোপের বিভিন্ন স্থান এবং ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে প্রচার করেন । 

১৯৯৯ সালে তিনি মায়াপুর ম্যানেজমেন্টের সেবায় যুক্ত হন । 

২০০০ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১২ বছর তিনি ইসকনের প্রধান কার্যালয় শ্রী ধাম মায়াপুর চন্দ্রোদয় মন্দিরের অধ্যক্ষ (CEO) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন । 

শ্রীপাদ নারু গোপাল প্রভুর শিক্ষাগুরু: ভক্তি বিদ্যা পূর্ন স্বামী মহারাজ । 

বর্তমানে তিনি ভারতের পাঁচটি প্রদেশ : পশ্চিমবঙ্গ , আসাম , বিহার , ঝাড়খণ্ড , এবং সিকির রিজিওনাল সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন । এবং বাংলাদেশের তিনি জিবিসি প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন । 

দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে তিনি শ্রীধাম মায়াপুরে বিভিন্ন সেবায় যুক্ত রয়েছেন ।

বাংলাদেশের সর্বত্র ভ্রমণ করে গৌরকথা পরিবেশন করে তিনি অগণিত ভক্তদের কৃষ্ণকথারসে প্লাবিত করেন । 

বিশ্বব্যাপী তিনি সুমধুর কীর্তন এবং গৌড়িয় ভজনসমূহ পরিবেশনের জন্য সমাদৃত .........

তিনি বর্তমানে করোনাকালিন সময়ে ২০২০ থেকে ভার্চুয়াল ক্লাসে আমাদের ওপর কৃপা বর্ষন করছেন 

Post a Comment

0 Comments