হরে কৃষ্ণ, সবাই কৃপা ক‌রে একটু ধৈয‌্য সহকা‌রে পড়‌বেন, তাহ‌লে আপনা‌র ভ‌বিষ‌্যত প্রজন্ম নি‌য়ে আর দুঃ‌চিন্তা থাক‌বে না ।।


 আজকে জানবো দশবিধ সংস্কার এর ১ম সংস্কার - 


 ক) গর্ভাধান (১ম সংস্কার)


আদর্শ পিতা মাতা হওয়ার প্রারম্ভিক সোপানই হলো, শাস্ত্রের নিয়মকে অনুসরণ করে সু -সন্তান ধারণে প্রবৃত্ত হওয়া!


বিবাহিত জীবনে একজন মাতাজীর এবং প্রভুর  পূর্ণতা পিতৃত্বে এবং মাতৃত্বে। আর পিতৃত্ব এবং মাতৃত্বের পূর্ণতা একজন সুস্থ-সবল, গুণবান, যশস্বী, সুশীল, এবং কৃষ্ণ ভক্ত সন্তান লাভ করার মাধ্যমে। কিন্তু আমাদের সনাতন ধর্মের এক তৃতীয়াংশ লোকেরাই জানিনা কেমন করে গর্ভধারণ করতে হয়? কোন প্রকারে সহবাস করলে একজন সুসন্তান লাভ করা সম্ভব? অনেকেই আক্ষেপ করে বলি এমন পিতা মাতার এমন কুসন্তান কোথা থেকে আসলো? আদৌ আমরা তার অন্তর্নিহিত কারন অনুসন্ধান করার চেষ্টা করিনা।


এবার চলুন সনাতন শাস্ত্রের আঙ্গিকে যৎকিঞ্চিত  আলোচনায় অগ্রসর হই-


 সন্তান লাভের মনোরথে স্বামী স্ত্রীর মিলনের জন্য তিথি-নক্ষত্র, দিন-ক্ষণ, শুভ-অশুভ বিচার বিশ্লেষণ আবশ্যক। উপরিউক্ত বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে স্বামী স্ত্রীর সঙ্গম করা অপরিহার্য।


স্মৃতি শাস্ত্রে বর্ণিত আছে----


নিষেকাদ্ বৈজিকং চৈনো গার্ভিকং চাপমৃজ্যতে।

ক্ষেত্রসংস্কার সিদ্ধিশ্চ গর্ভাধানফলং স্মৃতম্ ।।


অর্থাৎ- বিধি বিধান মতো এবং সংস্কার মতো গর্ভাধান থেকে শুভগুণ সম্পন্ন সুযোগ্য সন্তান সৃষ্ট হয়। আর এই সংস্কার থেকেই বীর্য ও গর্ভ সংক্রান্ত পাপের নাশ হয়, দোষ নষ্ট হয়, ক্ষেত্র সংস্কার হয়। এগুলিই হল গর্ভাধান সংস্কারের ফল বা পরিণতি ।


নানা সমীক্ষা ও গবেষণার দ্বারা এটা প্রত্যক্ষ প্রমাণিত হয়েছে যে, গর্ভাধান কালে স্ত্রী-পুরুষ যেমন ভাবনায় ভাবিত থাকেন, বা তাদের মানসিক অবস্থা যেমন থাকে তা তাদের রজঃ বীর্যে প্রতিফলিত হয়। সেই থেকে সৃষ্ট সন্তানের উপরে সেই ভাবনা পড়ে। পিতা মাতা যে মানসিকতা নিয়ে সন্তান ধারণে প্রবৃত্ত হন সেই মানসিকতা নিয়ে সন্তানের জন্ম হয়। অনেকে কষ্ট পেয়ে বলেন-


 *সন্তানটাকে মানুষ করতে পারলাম না*


শাস্ত্র বলছেন- মানুষ যা করার গর্ভকালীন সময়েই হয়ে যায়, পরবর্তীতে শত চেষ্টা করলেও তা পূর্ণতার স্তরে আসীন হয়না।


সুশ্রত সংহিতায় উল্লেখ আছে –


আহারাচার চেষ্টা ভিয়াদৃশোভি সমন্বিতৌ।

স্ত্রীপুংসৌ সমুপেয়াতাং তয়োঃ পুত্রোত্তপি তাদৃশঃ।।

        ( সুশ্রত সংহিতা / শরীর ২/৪৩/৫০ )


অর্থাৎ- নর নারী যেমন আহার করবেন, যে ব্যবহার বা প্রচেষ্টায় মিলিত হয়ে পরস্পর  সহবাস করবেন, তাদের পুত্র সন্তানও তেমনি স্বভাব প্রাপ্ত হবে।


তাই স্বামী-স্ত্রী কে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে সন্তান ধারণে প্রবৃত্ত হওয়া প্রয়োজন। সন্তান ধারণকালীন সময় এবং গর্ভে অবস্থানকালীন সময়, স্বামী স্ত্রীর সাধনার সময়। যার সাধনা যত পরিচ্ছন্ন তার সাধনার ফল তত পরিপক্ব। 


ঋতুকালের চতুর্থ দিনে স্নান করে পবিত্র হয়ে শ্রদ্ধা ভরে সাত্ত্বিক ভাবে ভগবানকে প্রণাম করে তারপর স্বামীর সঙ্গে সহবাস করলে সুশীল, ধার্মিক, উত্তম সন্তান লাভ হয়। রাত ১২ টা থেকে  রাত ৩ টা পর্যন্ত আসুরিক সময়। আসুরিক সময়কালে সন্তান ধারণ করলে সন্তানের মধ্যে আসুরিক গুণ পরিলক্ষিত হবে। 


***ঋতুর চতুর্থ, ষষ্ঠ, অষ্টম, দশম, দ্বাদশ, পঞ্চম, সপ্তম, নবম, একাদশ রাত্রে সহবাস অতি উত্তম***


 ***একাদশী, দ্বাদশী বা কোন ব্রতের পূর্বে বা ব্রতের দিন বা ব্রতের পরের দিন সহবাস করলে সন্তান অসুর হয়ে জন্মায়***


অমাবস্যা, পূর্ণিমা, চতুর্দশী, রবিবার, সংক্রান্তি, অষ্টমী, গ্রহণ, বারবেলা, কালবেলা, আসুরিকবেলা, শনিবার, মঙ্গলবার, পূজা পর্বের দিন সহবাসে উৎপন্ন সন্তান অাসুরিক কিংবা রাক্ষস মনোভাব নিয়ে জন্ম নেয়। সেই সন্তান দ্বারা সমাজ, সংসার, রাষ্ট্র, পিতা- মাতা, আত্মীয় স্বজন সর্বদা উদ্বেগ প্রাপ্ত হবেন।


***ভোরবেলা, গোধূলি লগ্নে এবং দুপুরে 

               সহবাস নিষিদ্ধ***


দৈত্যমাতা দিতি জোর পূর্বক কশ্যপ মুনিকে প্রাতঃকালে সহবাসে বাধ্য করলে তাহাদিগের হিরণ্যক্ষ এবং হিরণ্যকশিপু নামক দুই অসুর পুত্র ও হোলিকা নামক এক আসুরী কন্যা জন্ম নিয়েছিল। 


কেকসী সন্ধ্যাকালে বিশ্রবা মুনিকে সহবাসে বাধ্য করলে তাদের সহবাস দ্বারা যে সন্তান জন্ম নেয় তা রাক্ষস মনোভাব সম্পন্ন। নাম তার রাবণ। আর রাক্ষস  রাবনের আসুরিক মনোভাব আমরা সবাই অবগত। সুতরাং ঐ সময়ে সহবাস নিষিদ্ধ। 


গর্ভাধান একটি পবিত্র কর্ম, একটি সাধনা।

 শুদ্ধ বস্ত্রে, শুদ্ধ শয্যায়, শুদ্ধ চিত্তে সহবাসে লিপ্ত হতে হয় তবেই সুশীল, ধার্মিক, সুকুমার সুকুমারী পুত্র বা কন্যা সন্তান লাভ হয় । ক্লান্ত, চিন্তিত, ভয়ার্ত, বাহ্যক্রিয়া কিংবা প্রস্রাবের বেগ , ক্ষুধা, পিপাসা, মানসিক প্রতিকূলতার সময় সহবাস নিষিদ্ধ। 


গর্ভধারণের সময় ধর্ম চিন্তা করলে সন্তান ধার্মিক  হবে তা শতসিদ্ধ নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন শাস্ত্র। 


গর্ভাধানের আগে যে মন্ত্রটি পড়া আবশ্যক-


গর্ভং ধেহি সেনাবালি গর্ভং ধেহি প্রথুষ টুকে ।

গর্ভং তে অশ্বিনী দেবাবাধাতাং পুষ্কর স্রজৌ ।।


অর্থাৎ- সেনাবালি দেবি! এবং হে বিস্তৃত প্রথুষটুকা দেবী, তুমি এই স্ত্রীকে গর্ভধারণের সামর্থ দাও এবং তাকে পুষ্ট করো। কমল মালায় অশ্বিনীকুমার ভাতৃদ্বয় তার গর্ভকে পুষ্ট করুন।


তাই আমরা যদি সুসন্তান লাভ করতে চাই তাহলে অবশ্যই স্বামী স্ত্রীকে গর্ভধারণের সময়টাকে সাধনার সময়রুপে গ্রহণ করতে হবে।


মনে রাখা আবশ্যক,

 আদর্শ পিতা মাতা হওয়ার প্রারম্ভিক সোপানই  হলো, শাস্ত্রের নিয়মকে অনুসরণ করে সন্তান ধারণে প্রবৃত্ত হওয়া।


🟤 বৈদিক পরিবার পরিকল্পনার ধারণা | 

গর্ভাধান সংস্কার.. পর্ব 🔹


🌿 গর্ভাধান সংস্কার একটি যজ্ঞ 🔸


গর্ভাধান সংস্কারকে যজ্ঞ অথবা ভগবান বিষ্ণুর প্রতি যজ্ঞে আহুতি বলা যায়। যজ্ঞ সম্পাদন করতে অবশ্যই আগুন লাগবে এবং আগুনে আহুতি দেওয়ার জন্য দ্রব্য লাগবে (যা ভগবান বিষ্ণুকে নির্দেশ করে)।


 আহুতি হচ্ছে ইন্দ্রিয়ের বিষয় (যা হলোঃ শব্দ, রূপ,গন্ধ,স্পর্শ এবং স্বাদ); যেখানে ভক্তিযুগের আগুন যজ্ঞের আগুনকে নির্দেশ করে (এই কলিযুগে ভক্তিযোগ হচ্ছে হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করা)।সুতরাং ইন্দ্রিয়ের বিষয়গুলো ভক্তিযোগের আগুনে আহুতি দেয়া হয়। (যেমন,ইন্দ্রিয়গুলোকে ভক্তিযোগে নিয়োজিত করে)। 


একজন গৃহস্থ যে গর্ভাধান-সংস্কারের নিয়ম পালন করে, যা হচ্ছে নিয়ন্ত্রিত এবং মোহমুক্ত কাম,তাকে বলা হয় যজ্ঞ। কারণ তিনি ইন্দ্রিয়তৃপ্তির সাধারণ প্রবৃত্তি উচ্চতর পারমার্থিক জীবনের জন্য বলিদান করেন।


 শ্রোত্রাদীনীন্দ্রিয়াণ্যণ্যে সংযমাগ্নিষু জুহ্বতি |

শব্দাদীন বিষয়ানন্য ইন্দ্রিয়াগ্নিষু জুহ্বতি || (ভগবদগীতা ৪/২৬)


তাই যিনি বিবাহিত জীবনে কাম উপভোগের নিয়মকানুন মেনে চলেন তাকেও ব্রহ্মচারী বলা হয়।

 এরকম ব্রহ্মচর্যের অঙ্গীকার ছাড়া কেউ যোগসিদ্ধি (যেমনঃ ধ্যান,জ্ঞান অথবা ভক্তিযোগ) লাভ করতে পারে না। ~শ্রীল প্রভুপাদ, শ্রীমদভগবদগীতা ৬/১৩-১৪।


🌿 গর্ভাধান-সংস্কার কৃষ্ণভাবনাময় সন্তান উৎপাদন করে🔸


▪️এই জড় জগতে দুই শ্রেণীর আত্মা রয়েছেঃ


দৈবীভাবাপন্ন এবং আসুরিক। 


[দ্বৌ ভূতসগৌ লোকেহস্মিন দৈব আসুর এব চ] (ভগবদগীতা ১৬/৬)


দম্পতি মাতৃগর্ভে কোন ধরনের আত্মাকে (দৈবীভাবাপন্ন অথবা আসুরিক) আকৃষ্ট করবে তা নির্ধারিত হয় গর্ভাধানের সময়, যা প্রকৃতপক্ষে শুক্রাণু, ডিম্বাণু এবং আত্মার মিলন। 


আত্মার দৈবী এবং আত্মার মিলন। আত্মার দৈবী এবং আসুরিক ভাব শ্রীমদভগবদগীতায় (১৬.১-১৬.৩) বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে। 


সেখানে, 'অভিজাতস্য' শব্দটি শ্রীকৃষ্ণ কর্তৃক ব্যাবহৃত হয়েছে, যার অর্থ হচ্ছে জীবাত্মা দৈব অথবা আসুরিক প্রবৃত্তি নিয়ে জন্ম গ্রহণ করে। -শ্রীল প্রভুপাদ, শ্রীমদভগবদগীতার তাৎপর্য ১৬.১-৩। 


জীবাত্মার দৈবী গুণাবলী এবং আসুরিক গুণাবলী এই বইয়ের 'পরিশিষ্ট' অংশে বর্ণিত হয়েছে। 

 

গর্ভাধান-সংস্কারের নীতিমালার উপর ভিত্তি করে সন্তান ধারণ, জন্মগ্রহণ করতে আকৃষ্ট জীবাত্মা দৈবী নাকি আসুরিক ভাবাপন্ন হবে তা নির্ধারণ করে। তাই, গর্ভাধান-সংস্কার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 


🌸 গর্ভাধান সংস্কারের গুরুত্ব বর্ণনা করার পর, এবার আমরা বৈদিক পরিবার পরিকল্পনার উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করবো।


মে-০৮


তোমাকে এটি প্রকাশ্যে ঘোষণা করতে হবে যে “আমি গর্ভাধান সংস্কার করতে যাচ্ছি। এটি কোন গোপনীয় বিষয় নয়। এটি একটি অনুষ্ঠান। আর তারপর যখন সে (স্ত্রী) গর্ভবতী, তখন কোন মিলন নয়। কোন মিলন নয় মানে যত দিন শিশুটি সেখানে রয়েছে, দশ, মাস এবং যতদিন শিশুটি বড় না হয় কমপক্ষে ছয় মাস, কোন মিলন নয় তার মানে একবার যদি যৌন সহবাস হয়, তারপর ষোল মাসের জন্য বিরতি নাও।


ঋষিকেশ, মে ৮, ১৯৭৭


🙏🙏 একটি শিক্ষনীয় পোস্ট। সবাইকে পড়ার জন্য অনুরোধ রইল।


🔴প্রসঙ্গ--- গর্ভধারণ 🔴

******************************************

বিবাহিত অর্থাৎ দাম্পত্য জীবনের মূল লক্ষ্য হল সুস্থ্য সবল, গুণবান, যশস্বী, ধার্মিক, সুশীল সন্তান প্রাপ্তি। স্ত্রী পুরুষের স্বাভাবিক গঠন এমন যে তারা পরস্পর মিলিত হলে স্ত্রী গর্ভবতী হয়। যদি এই মিলনের জন্য তিথি নক্ষত্র, দিন ক্ষণ, শুভ ও অশুভ বিচার করে দিন নির্ধারণ করা হয় তবে তার সুপ্রভাব সন্তানের ওপর পড়ে।


স্মৃতি শাস্ত্রে লিখিত আছে-------

নিষেকাদ্ বৈজিকং চৈনো গার্ভিকং চাপমৃজ্যতে।

ক্ষেত্রসংস্কার সিদ্ধিশ্চ গর্ভাধানফলং স্মৃতম্।।

অর্থাৎ---বিধি বিধান মতো এবং সংস্কার মতো গর্ভাধান থেকে শুভগুণ সম্পন্ন সুযোগ্য সন্তান সৃষ্ট হয়। আর এই সংস্কার থেকেই বীর্য ও গর্ভ সংক্রান্ত পাপের নাশ হয়, দোষ নষ্ট হয়,ক্ষেত্র সংস্কার হয়। এগুলিই হল গর্ভাধান সংস্কারের ফল বা পরিণতি।


নানা সমীক্ষা ও গবেষোণার দ্বারা এটা প্রত্যক্ষ করা হয়েছে গর্ভাধান কালে স্ত্রী-পুরুষ যেমন ভাবনায় ভাবিত থাকেন, বা তাদের মানসিক অবস্থা যেমন থাকে তা তাদের রজঃ বীর্যে প্রতিফলিত হয়। সেই থেকে সৃষ্ট সন্তানের ওপরে সেই ভাবনা পড়ে।


সুশ্রত সংহিতায় লেখা আছে।

আহারাচার চেষ্টা ভিয়াদৃশোভি সমন্বিতৌ।

স্ত্রীপুংসৌ সমুপেয়াতাং তয়োঃ পুত্রোত্তপি তাদৃশঃ।।

( সুশ্রত সংহিতা / শরীর ২/৪৩/৫০ )

অর্থাৎ---নর নারী যেমন আহার ব্যবহার বা প্রচেষ্টায় মিলিত হয়ে পরস্পর সহবাস করে তাদের পুত্র সন্তানও তেমনি স্বভাব প্রাপ্ত হয়।


গর্ভাদানের দিন ভোরে স্নান করে পবিত্র হয়ে শ্রদ্ধা ভরে সাত্ত্বিক ভাবে ভগবান ও গুরুবর্গদিগকে প্রণাম করে, ৫০ মালা  হরিনাম জপ করে, তুলসি সেবা, গোমাতা সেবা করে, তাহার পর স্বামীর সাথে সহবাস করলে সুশীল, ধার্মিক, উত্তম সন্তান লাভ হয়। রাত ১২-টা থেকে ভোর ৩-টের মধ্যে সহবাসের ফলে যে সন্তান জন্ম হয় সে ভক্ত হয়, অর্থাৎ ধার্মিক হয়। ঋতুর চতুর্থ, ষষ্ঠ, অষ্টম, দশম, দ্বাদশ, চতুর্দশ,এবং পঞ্চম, সপ্তম, নবম, একাদশ, ত্রয়োদশ, পঞ্চদশ রাত্রে সহবাস অতি উত্তম।।তবে জোড় সংখ্যক  দিনে গমনে পুত্র সন্তানের জন্ম হয় এবং বিজোড় সংখ্যক দিনে গমনে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। 

একদশী, দ্বাদশী বা কোন ব্রতের আগে বা ব্রতের দিন বা ব্রতের পরের দিন সহবাস করলে সন্তান অসুর হয়ে জন্মায়। অমাবস্যা, পূর্ণিমা, চতুর্দশী, রবিবার, সংক্রান্তি, অষ্টমী, গ্রহণ, বারবেলা, কালবেলা, রাক্ষসীবেলা, শণিবার, মঙ্গলবার, পূজা পর্বের দিন সহবাসে উৎপন্ন সন্তান রাক্ষস ও দুঃখী হয়। সকালে, সন্ধ্যায়, দূপুরে সহবাস সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।


দৈত্যমাতা দিতি জোর করে কশ্যপ মুনিকে প্রাতঃকালে সহবাসে বাধ্য করলে তাহাদিগের হিরন্যক্ষ – হিরন্যকশ্যপুর নামক দুই অসুর পুত্র ও হোলিকা নামক এক আসুরী কন্যা জন্মায়।

কেকসী সন্ধ্যাকালে বিশ্রবা মুনিকে সহবাসে বাধ্য করলে তাদের সন্তান রাবণ রাক্ষস হয়।


সুতরাং--- ঐ সময়ে সহবাস নিষিদ্ধ। অল্প কথায় গর্ভাধান একটি পবিত্র কর্ম। শুদ্ধ বস্ত্রে, শুদ্ধ শয্যায়, শুদ্ধ চিত্তে সহবাসে লিপ্ত হতে হয় তবেই সুশীল, ধার্মিক, সুকুমার সুকুমারী পুত্র বা কন্যা সন্তান লাভ হয়।ক্লান্ত, চিন্তিত, ভয়ার্ত, পায়খানা-প্রস্রাবের বেগ, ক্ষুধা, পিপাসা, মানসিক প্রতিকূলতার সময় সহবাস নিষিদ্ধ। গর্ভধারণের সময় ধর্ম চিন্তা করলে সন্তান ধার্মিক হয়।।


গর্ভাধানের আগে এই মন্ত্র পাঠ করতে হয়।

গর্ভং ধেহি সেনাবালি গর্ভং ধেহি প্রথুষ টুকে।

গর্ভং তে অশ্বিনী দেবাবাধাতাং পুষ্কর স্রজৌ।।

অর্থাৎ--- সেনাবালি দেবি!এবং হে বিস্তৃত প্রথুষটুকা দেবী,তুমি এই স্ত্রীকে গর্ভধারণের সামর্থ্য দাও ও তাকে পুষ্ট করো। কমল মালায় অশ্বিনী-কুমার ভাতৃদ্বয় তার গর্ভকে পুষ্ট করুন।


সন্তান উৎপাদন করা শুধু এই জন্যই নয় যে, সে আপনাকে শেষ বয়সে ভালো-মন্ধ খাওয়াবে, দেখা শুনা করবে, সেবা করবে। মৃত্যুর পর যদি আপনি আর আমি নিজ কর্ম দোষে নরকগামী হন, তখন সেই সন্তান-ই যেনো আপনাকে নরক থেকে উদ্ধার করতে পারে। তাই সুষ্ঠ, সবল, ভক্ত ও ধার্মিক সন্তান সবারই কাম্য হউক !!


--------হরে কৃষ্ণ।

Post a Comment

0 Comments