আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার।

#শ্রীশ্রী_রাধাষ্টমী_ব্রত 

দুপুর পর্যন্ত উপবাস। আপনারা সবাই কৃপা করে রাধাষ্টমী তিথি পালন করবেন।


✅রাধাষ্টমী ব্রত মাহাত্ম্য 🙏 🙏 🙏 🙏

      

 "পদ্মপুরাণে শ্রীনারদের প্রতি শিবঠাকুর বলেছিলেন,

  

  "হে দেবর্ষি: ব্রহ্মা প্রমুখ মহান সন্তগণের নিত্য মহারাধ্যা যিনি, দেবতাগণ দূর থেকে যাঁর সেবা করতে ইচ্ছা করেন, সেই শ্রীশ্রীরাধিকাদেবীকে সতত ভজনা করা উচিত। এই রাধানাম যে ব্যক্তি শ্রীকৃষ্ণনামের সঙ্গে কীর্ত্তন করেন, তার মাহাত্ম্য আমি কীর্ত্তন করতে সক্ষম নই, এমনকি শ্রীঅনন্তদেবও নন"।


 প্রপঞ্চ লীলায় পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অন্তরঙ্গা স্বরূপ শক্তি গোলোকেশ্বরী রাধারাণী ভাদ্র মাসে শুক্লা অষ্টমী তিথিতে অনুরাধা নক্ষত্রে সোমবারে মধ্যাহ্ন কালে ব্রজমণ্ডলে শ্রীগোকুলের অনতিদূরে রাভেল নামক গ্রামে শ্রীবৃষভানু রাজা ও কীর্তিদা মায়ের ভবনে সকলের হৃদয়ে আনন্দ দান করে আবির্ভূত হন। শ্রীরাধারাণী প্রাণনাথ স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ব্যতিত এই রাধাষ্টমী তিথির সম্যক মাহাত্ম্য কেউই বর্ণনা করতে পারে না। 


শ্রীপদ্মপুরাণে (ব্রহ্মখণ্ড ৭/৮) বলা হয়েছে–


একাদশ্যাঃ সহস্রেন যং ফলং লভতে নরঃ। 

রাধা জন্মাষ্টমী পুণ্যং তস্মাং শত গুণাধিকম্।।


অর্থঃ"একহাজার একাদশী ব্রত পালন করলে যে ফল লাভ হয়, শ্রীরাধাষ্টমী ব্রত পালন করলে তার চেয়ে শতগুণ  অধিক ফল লাভ হয়ে থাকে"। 


আরও বলা হয়েছে–

১)কোটি কোটি জন্মের অর্জিত পাপরাশি ভক্তিপূর্ণ রাধাষ্টমী ব্রতের ফলে বিনষ্ট হয়ে যায়।


২)সুমেরু পর্বত প্রমাণ  সোনা দান করলে যে ফল লাভ হয় একটি মাত্র রাধাষ্টমী ব্রত উদযাপন করলে তার থেকে একশ গুণ বেশি ফল লাভ হয়।


 ৩)গঙ্গা ইত্যাদি সমস্ত পবিত্র তীর্থে স্নান করে যে ফল লাভ হয় একমাত্র বৃষভানু কন্যার জন্মাষ্টমী পালন করে সেই ফল লাভ হয়।


৪)পদ্ম পুরাণে আরো বলা হয়েছে


রাধাষ্টমী ব্রতং তাত যো ন কুর্য্যাচ্চ মূঢ়ধী। 

নরকান্ নিষ্কৃতি নাস্তি কোটিকল্প শতৈরপি।। 


 অর্থঃ "যে মূঢ় মানুষ রাধাষ্টমী ব্রত করে না, সে শতকুটি কল্পেও নরক থেকে নিস্তার পেতে পারে না"।


৫)একবার রাধাষ্টমী ব্রত পালনে সহস্র কন্যাদানের ফল লাভ হয়।


৬)যদি কোনো পাপী ব্যক্তি অশ্রদ্ধায় বা অবহেলায়ও রাধাষ্টমী ব্রত পালন করে তাহলে তার কোটি কূলসহ বিষ্ণুলোকে নিত্যকাল বিরাজ করবে।


৭)একবার রাধাষ্টমী ব্রত পালন করলে গোহত্যা, ব্রহ্মহত্যাসহ সর্বপাপ বিনষ্ট হয়। 


৮)যদি কোনো মূঢ় ব্যক্তি জেনে বা না জেনে রাধাষ্টমী ব্রত পালন করে না তাহলে শতকোটি কল্পেও সে নরক যন্ত্রণা থেকে নিষ্কৃতি পাবে না।


#যদি কেউ রাধাষ্টমী ব্রত মাহাত্ম্য শ্রবন করতে পারে তাহলে সে নিত্যকাল বৈকুণ্ঠলোকে বাস করার সৌভাগ্য অর্জন করতে পারবে।


▪️তাই ভক্ত রাধারানীর কাছে প্রার্থনা করেন,


“শ্রীলক্ষ্মীদেবী বিশ্বের বন্দনীয় যুবতীগণ দ্বারা পূজিতা হলেও রূপ , নব যৌবনাদি সম্পত্তি , সৎ - স্বভাব ও মনােজ্ঞ লীলা বিষয়ে যে  শ্রীরাধিকার সমান নন এবং যে শ্রীরাধিকা অপেক্ষা জগতে অধিক গুণসম্পন্না কেউ নেই , সেই শ্রীরাধিকা আমাকে তাঁর শ্রীপাদপদ্মের দাস্য দান করুন”।


অর্থঃ"যে নারী শ্রীশ্রীরাধাকৃষ্ণের প্রীতিকর সর্ব পাপনাশক এই শুভপ্রদ মহাব্রত পালন করে না, সে জীবনের অন্তকালে নরকে গিয়ে চিরকাল সেকানে যাতনা ভোগ করে। পৃথিবীতে থাকাকালীনও সে দুর্ভাগিনী  হয়"। 

আগামী  ১৪  সেপ্টেম্বর,  শ্রীমতী রাধা ঠাকুরানীর শুভ আবির্ভাব তিথি মহোৎসব।

(দুপুর ১২ টা পর্যন্ত উপবাস)

.

বৃন্দাবনের নিকটবর্তী বর্ষণা এলাকার অন্তর্গত রাভেল নামক অতি পবিত্র স্থানে বৃন্দাবনেশ্বরী শ্রীমতি রাধারাণী আর্বিভূত হন।

শ্রীমতি রাধারাণীর আবির্ভাব সম্বন্ধে যে বর্ণনা শাস্ত্রে রয়েছে, তা হল, একদিন রাজা বৃষভানু যমুনা নদীতে স্নান করতে যান। সেই সময়ে যমুনা নদী বর্ষণার রাভেল স্থানটির পাশ দিয়ে বয়ে যেত।

ঐ স্থান দিয়ে এক কালে যমুনা নদী যে বয়ে যেত তা ভূতত্ত্বগত প্রমাণ রয়েছে। সেই যাই হোক, রাজা বৃষভানু যমুনা নদীতে স্নান করতে গিয়ে দেখলেন সহস্য সূর্যের আলোকের মতো জ্যোতির্ময় এক সোনার পদ্ম ঠিক যমুনা নদীর মাঝখানে ফুটে রয়েছে। আর সেই সোনার পদ্মের মধ্যে রয়েছে একটি ছোট শিশুকন্যা। প্রথমে রাজা বৃষভানু বিস্মিত হলেন। 

.

কিন্তু ব্রহ্মাজী তখন সেই স্থানে আর্বিভূত হয়ে রাজা বৃষভানুর বিস্ময়ের নিরসন করলেন।

তিনি জানালেন যে রাজা বৃষভানু ও তাঁর পত্নী কীর্তিদা পূর্বজন্মে ভগবান বিষ্ণুর পত্নীকে কন্যারূপে লাভ করার জন্য কঠোর তপস্যা সম্পাদন করেছিলেন।

সেই তপশ্চর্যার ফলস্বরূপ এই জন্মে তাঁরা স্বয়ং ভগবানের শক্তি তথা পত্নীকে এইভাবে কন্যারূপে লাভ করেছেন।

ব্রহ্মাজীর কথা শুনে রাজা বৃষভানু সেই শিশুকন্যা শ্রীমতি রাধারাণীকে নিজ গৃহে নিয়ে এলেন। 

.

কিন্তু দেখা গেল সেই শিশু রাধারাণী কিছুতেই চোখ খুলছেন না। তাঁর চোখ সর্বদা বন্ধ রয়েছে।

তবে কি এই শিশুকন্যা অন্ধ ? সকলের এই প্রশ্ন নিরসনের উদ্দেশ্য অবশেষে নারদমুনি রাজা বৃষভানুর সম্মুখে উপস্থিত হয়ে শিশুর এই অন্ধত্ব অবস্থা সত্ত্বেও শিশুর জন্মকালীন সকল ধরনের শুভ উৎসবাদির আয়োজন গৃহে করতে বললেন।

নারদমুনীর কথা অনুযায়ী রাজা বৃষ্ণভানু গৃহে উৎসবের আয়োজন করলেন। 

.

সেই উৎসবে নন্দ মহারাজ ও শিশু কৃষ্ণসহ সপরিবারে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন।

ঐ অনুষ্ঠানে আগমন করে শিশু কৃষ্ণ যখন হামাগুড়ি দিয়ে শিশু রাধারাণীর দিকে এগিয়ে গেলেন, রাধারাণী তখন এক দিব্য সৌরভের ঘ্রাণ লাভ করলেন, আর সেই মুহুর্তে রাধারাণী চোখ খুলে প্রথমে দর্শন করলেন তার নিত্য পতি পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে।

আজ থেকে ৫ হাজার বছর পূর্বে বর্ষাণা ক্ষেত্রের রাভেল নামক স্থানে এইসব ঘটনা ঘটেছিল।

.

এখন রাভেল অত্যন্ত নির্জন এক প্রান্তর।

স্বল্প জনসংখ্যার একটি প্রত্যন্ত গ্রাম।

তবে এখনও শ্রীমতি রাণারাণীর লীলাস্থলিগুলো বর্তমান।

.

পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নিত্য লীলাবিলাস স্থান শ্রীবৃন্দাবন। এ স্থানের ধূলিকণাও এত পবিত্র যে স্বয়ং শ্রীব্রহ্মাসহ সকল দেবতারা এই পবিত্র ভূমির ঘাস হয়ে জন্মাতে অভিলাষ করেন।

শ্রীবৃন্দাবন ধাম সকলেরই আরাধ্য। কিন্তু কালের প্রভাবে একসময় এই ধাম অবলুপ্ত হলে কলিযুগের পাবনাবতারী শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এই ধামের বহু স্থান উদ্ধার করেন।

পরবর্তীতে তিনি তার প্রিয় ষড় গোস্বামীদের উক্ত ধাম পরিচর্যার দায়িত্ব অর্পন করেন।

ষড় গোস্বামীগণও বৃন্দাবনের বহু লুপ্ত স্থান উদ্ধার করেন।


        🙏   হরে কৃষ্ণ   🙏


শ্রীমতি রাধারাণীর আর্বিভাব স্থান


(১৪ই সেপ্টম্বর ২০২১ রাধাষ্টমী তথা শ্রীমতিরাধারাণীর আর্বিভাব তিথি। এ উপলক্ষে আপনাদের সবাইকে সকাল থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত উপবাস থেকে শ্রীকৃষ্ণ শক্তি এবং অভিন্ন শ্রীমতি রাধারাণীর চরণে প্রার্থনা নিবেদনের জন্য বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি। এই রাধাষ্টমীর পবিত্র দিনে চলুন শ্রীমতি রাধারাণীর আর্বিভাব স্থানের দিব্য দর্শন লাভ করি)


রাভেল- দিব্য জন্মস্থান


পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নিত্য লীলাবিলাস স্থান শ্রীবৃন্দাবন। এ স্থানের ধূলিকণাও এত পবিত্র যে স্বয়ং শ্রীব্রহ্মাসহ সকল দেবতারা এইপবিত্র ভূমির ঘাস হয়ে জন্মাতে অভিলাষ করেন। শ্রীবৃন্দাবন ধাম সকলেরই আরাধ্য। কিন্তু কালের প্রভাবে একসময় এই ধাম অবলুপ্ত হলে কলিযুগের পাবনাবতারী শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এই ধামের বহু স্থান উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে তিনি তার প্রিয় ষড় গোস্বামীদের উক্ত ধাম পরিচর্যার দায়িত্ব অর্পন করেন। ষড়গোস্বামীগণও বৃন্দাবনের বহু লুপ্ত স্থান উদ্ধার করেন।


বৃন্দাবনের নিকটবর্তী বর্ষাণা এলাকার অন্তর্গত রাভেল নামক অতি পবিত্র স্থানে বৃন্দাবনেশ্বরী শ্রীমতি রাধারাণী আর্বিভূত হন। শ্রীমতি রাধারাণীর আবির্ভাব সম্বন্ধে যে বর্ণনা শাস্ত্রে রয়েছে, 


তা হল, একদিন রাজা বৃষভানু যমুনা নদীতে স্নান করতে যান। সেই সময়ে যমুনা নদী বর্ষাণার রাভেল স্থানটির পাশ দিয়ে বয়েযেত। ঐ স্থান দিয়ে এক কালে যমুনা নদী যে বয়ে যেত তা ভূতত্ত্বগত প্রমাণরয়েছে। সেই যাই হোক, রাজা বৃষভানু যমুনা নদীতে স্নান করতে গিয়ে দেখলেন সহস্য সূর্যের আলোকের মতো জ্যোতির্ময় এক সোনার পদ্ম ঠিক যমুনা নদীর মাঝখানে ফুটে রয়েছে। আর সেই সোনার পদ্মের মধ্যে রয়েছে একটি ছোট শিশুকন্যা। প্রথমে রাজা বৃষভানু বিস্মিত হলেন। কিন্তু ব্রহ্মাজী তখন সেই স্থানে আর্বিভূত হয়েরাজা বৃষভানুর বিস্ময়ের নিরসন করলেন। তিনি জানালেন যে রাজা বৃষভানু ও তাঁর পত্নী কীর্তিদা পূর্বজন্মে ভগবান বিষ্ণুর পত্নীকে কন্যারূপে লাভ করার জন্য কঠোর তপস্যা সম্পাদন করেছিলেন। সেই তপশ্চর্যার ফলস্বরূপ এই জন্মে তাঁরা স্বয়ং ভগবানের শক্তি তথা পত্নীকে এইভাবে কন্যারূপে লাভ করেছেন। ব্রহ্মাজীর কথা শুনে রাজা বৃষভানু সেই শিশুকন্যা শ্রীমতি রাধারাণীকে নিজ গৃহে নিয়েএলেন। কিন্তু দেখা গেল সেই শিশু রাধারাণী কিছুতেই চোখ খুলছেন না। তাঁর চোখসর্বদা বন্ধ রয়েছে। তবে কি এই শিশুকন্যা অন্ধ ? সকলের এই প্রশ্ন নিরসনেরউদ্দেশ্য অবশেষে নারদমুনি রাজা বৃষভানুর সম্মুখে উপস্থিত হয়ে শিশুর এইঅন্ধত্ব অবস্থা সত্ত্বেও শিশুর জন্মকালীন সকল ধরনের শুভ উৎসবাদির আয়োজনগৃহে করতে বললেন। নারদমুনীর কথা অনুযায়ী রাজা বৃষ্ণভানু গৃহে উৎসবের আয়োজনকরলেন। সেই উৎসবে নন্দ মহারাজ ও শিশু কৃষ্ণসহ সপরিবারে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। ঐ অনুষ্ঠানে আগমন করে শিশু কৃষ্ণ যখন হামাগুড়ি দিয়ে শিশু রাধারাণীর দিকে এগিয়ে গেলেন, রাধারাণী তখন এক দিব্য সৌরভের ঘ্রাণ লাভ করলেন, আর সেই মুহুর্তে রাধারাণী চোখ খুলে প্রথমে দর্শন করলেন তার নিত্য পতি পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে। আজ থেকে ৫ হাজার বছর পূর্বে বর্ষাণা ক্ষেত্রের রাভেল নামক স্থানে এইসব ঘটনা ঘটেছিল।


এখন রাভেল অত্যন্ত নির্জন এক প্রান্তর । স্বল্প জনসংখ্যার একটি প্রত্যন্ত গ্রাম। তবে এখনও শ্রীমতি রাণারাণীর লীলাস্থলিগুলো বর্তমান। আসুন নিম্নে আমরা চিত্র অনুসারে সেই দিব্য তীর্থস্থান সমূহদর্শন করি :


বর্ষাণায় অনেকেই গমন করেন। কিন্তু রাধারাণীর মূল এই জন্মক্ষেত্র রাভেল অনেকের কাছেই হয়তো এখনো অজানা। এখনো অতি সাধারণ গ্রামটিতে শ্রীমতিরাধারাণীর দিব্য উপস্থিতি অনুভব করা যায়। তাই আপনি যদি শ্রীমতি রাধারাণীর কৃপা লাভ করতে চান তাহলে বৃন্দাবন পরিক্রমায় এই অপ্রাকৃত ধাম রাভেল দর্শন করে আসতে পারেন।

Post a Comment

0 Comments