"99 Club"
একদিন এক রাজা তার মন্ত্রীসহ হাঁটতে বেড়িয়েছেন। হাঁটতে হাঁটতে তারা একটি খামার দেখতে পেলেন। তারা দেখলেন খামারে যে কৃষক কাজ করছে সে তার পরিবার নিয়ে খুব খুশি। পরিবারে তার স্ত্রী ছাড়াও এক সন্তান রয়েছে। তারা তিনজনেই খুব আমোদ আহ্লাদে দিন কাটাচ্ছে দেখে রাজা তার মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমার এত সুন্দর প্রাসাদ, বিনোদনের অফুরন্ত আয়োজন তবুও আমি এরকম করে হাসতে পারিনা আর এই গরীব কৃষকের কী এমন আছে যে সে এরকম করে হাসতে পারছে?

মন্ত্রী বললেন, মহারাজ কারণ তার পরিবার এখনো 99 Club এর সদস্য হয়নি।
রাজা অবাক হয়ে বললেন, সেটা আবার কি?

মন্ত্রী বললেন সেটা আমি বলতে পারি যদি আপনি আমাকে ৯৯ টি স্বর্ণমুদ্রা দেন। রাজা মন্ত্রীকে ৯৯ টি স্বর্ণ মুদ্রা দিলে এবারে মন্ত্রী বললেন, আমি আপনাকে বলব তবে সেটা আরো ছ মাস পরে।

মন্ত্রী ৯৯ টি মুদ্রা রাতে কৃষকের দরজায় ঝুলিয়ে রেখে আসলেন। পরদিন সকালে কৃষক স্বর্ণমুদ্রার ব্যাগটি পেয়ে বাড়ির পেছনে ছুটল। উত্তেজনায় কাঁপাকাঁপা হাতে গুণে দেখল সে, ৯৯ টি মুদ্রা। আবার গুণল, ৯৯। বউকে ডেকে গুণতে বলল, ৯৯, ছেলেকে ডাকল, একই ফলাফল ৯৯। কৃষক রেগে গিয়ে বলতে লাগল কোন আহাম্মক এখানে ৯৯ টা মুদ্রা রেখে গেছে! রাউন্ড ফিগার করে ১০০ টি রাখতে পারেনি! এরপর কৃষক সিদ্ধান্ত নিল, ৯৯ কে ১০০ বানাতে হবে। উদয়াস্ত পরিশ্রম করতে শুরু করল সে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় এসে গুণে দেখে সব ঠিক আছে কিনা। একদিন সে গুণে দেখে ৯৭, বউকে জিজ্ঞাসা করলে বউ উত্তর দিল সেখান থেকে দুটো নিয়ে সে খরচ করে ফেলেছে। বউয়ের সাথে ঝগড়াঝাটির মধ্যে কৃষকের ছেলে আরো দুটো খরচ করে ফেলেছে। শুরু হল সংসারে অশান্তি।

ছমাস পরে মন্ত্রী রাজাকে নিয়ে বের হলেন। ইতোমধ্যে সেই পরিবার থেকে সুখ, শান্তি, ভালোবাসা সব উধাও। রাজা মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলেন ছমাসের মধ্যে কী এমন ঘটল যে এরকম হাসিখুশি পরিবারটি এখন এরকম হয়ে গেল! মন্ত্রী বললেন, কারণ পরিবারটি অফিসিয়ালি এখন 99 Club এর মেম্বার। 

রাজা বললেন, এখন বল 99 Club টা আসলে কি জিনিস? মন্ত্রী বললেন, মহারাজ 99 Club হচ্ছে এমন একটা ক্লাব যার মেম্বাররা ৯৯ টি মুদ্রা হাতে থাকার পরেও সেটা খরচ করতে পারেনা। বরং হাতে না থাকা একটির পেছনে দৌড়ায়, উদয়াস্ত দৌড়াতে দৌড়াতে নিজের সুখ,শান্তি, হাসি, আনন্দ মাটি করে ফেলে। যারা হাতে থাকা জিনিসটি ব্যবহার করে সুখী না হয়ে হাতে না থাকা জিনিসটি ধরার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে থাকে মূলত তারাই নাইন্টি নাইন ক্লাবের মেম্বার। এরা ভুলে যায় সুখ একটা জার্নি। আগামীকাল কি হবে তার আশায় বসে না থেকে বরং হাতে থাকা আজকের জিনিসটি নিয়েই জীবনে সুখী হতে হয়। 

কার্টেসিঃ গৌর গোপাল দাস।

 

Post a Comment

0 Comments