বই = শ্রীল প্রভুপাদের গল্পে উপদেশ।


বিষয় = একমুঠো সরিষা দানা।


একসময় কিসা গৌতমী নামে এক অল্পবয়সী নারী বাস করত। তার একটি পুত্র ছিলো, যে, খুব অল্প বয়সেই মারা গেল। বাচ্চার মৃতদেহ নিয়ে কান্না করতে করতে ঐ মাতা বুদ্ধের নিকট হাজির হয়ে বলতে লাগল, "আমার একমাত্র পুত্র মারা গেছে, আপনি আমার প্রতি কৃপা করুন এবং তার জীবন ফিরিয়ে দিন।" তখন বুদ্ধ বললেন, "হে পুত্রী, আমি তার প্রাণ ফিরিয়ে দিতে পারি, যদি তুমি আমাকে একমুঠো সরিষা দানা এনে দিতে পারো। কিন্তু দানাগুলো এমন একটি বাড়ি থেকে আনতে হবে, যে বাড়িতে কখনও কেউ মারা যায়নি।" তখন মহিলাটি বলল, "যদি এর ফলে আমার পুত্রের প্রাণ ফিরে আসে, তাহলে অবশ্যই আমি আপনার আজ্ঞা পালন করবো।" তারপর মহিলাটি সরিষা দানার সন্ধানে বিভিন্ন গৃহে যেতে লাগল। কিন্তু এর মধ্যে গৌতমী একটি সমস্যার সম্মুখীন হলো। সে যে গৃহে যাচ্ছে প্রথমে তারা সবাই সরিষার দানা দিতে রাজি হয়, কিন্তু যখনই শর্তের কথা শোনে, তখনই সরিষা দিতে অক্ষমতা প্রকাশ করে। কারণ প্রত্যেকের গৃহেই কেউ না কেউ মারা গিয়েছে। অনেক খোঁজার পরেও গৌতমী ব্যর্থ হলো এবং বুঝতে পারল, কেনো ভগবান বুদ্ধ তাকে এমন কার্য  সম্পাদন করতে পাঠিয়েছেন। এতে তার দুঃখ কিছুটা লাঘব হলো এবং এর মাধ্যমে সে জ্ঞান লাভ করতে পারল। তারপর সে বুদ্ধদেবের কাছে ফিরে গেল এবং কি ঘটেছে সব কিছু খুলে বলল। তখন বুদ্ধ বললেন, "দেখো পুত্রী, এ জগতে কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়। সবকিছুই নশ্বর এবং মরণশীল। এই পরিবর্তন এবং মৃত্যুই সকল দুঃখ-যন্ত্রণার মূল কারণ। ভগবানের দিব্য নামের আশ্রয় গ্রহণ করে এই দুঃখ-যন্ত্রণা থেকে মুক্তি লাভ করতে পারো।"


( মঙ্গলজনক উপদেশ- এ জগতের সব কিছুরই ধ্বংস ও পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী। আর এই পরিবর্তনই দুঃখ ও ভোগান্তি বয়ে আনে। আর এসব থেকে মুক্ত হওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত গ্রহণ করা এবং ভগবানের দিব্য নাম জপ করা। )

Post a Comment

0 Comments