যার যেমন কর্ম তাকে তেমন ফল ভোগ করতে হয়-

যার যেমন কর্ম তাকে তেমন ফল ভোগ করতে হয়-


একটি সুন্দর উদাহরণ প্রাচীনকালে গৌতমী নামক এক পরম ধার্ম্মিক রমণী ছিলেন এবং সংসারে তাহার একটি মাত্র পুত্র ব্যতীত আর কেহই ছিলনা। একদিন বনের মধ্যে হঠাৎ একটি সর্প তাহাকে দংশন করে যাহার ফলে তাহার মৃত্যু হয়।
ঠিক সে সময়ে ঐস্থান দিয়া এক ব্যাধ যাচ্ছিল এবং সে তৎক্ষণাৎ সাপটিকে ধরে ফেলল এবং উহাকে বন্ধন করিয়া ফেলিল।অতঃপর ব্যাধটি বিধবা গৌতমীর নিকট গিয়া বলিল মা এই সাপটিই আপনার সন্তানটিকে কেটেছে আপনি আদেশ করুন আমি এখনই উহাকে খন্ড খন্ড করে কেটে ফেলে উপযুক্ত শাস্তি দিই। গৌতম পু্ত্র শোকে ব্যাকুল হয়ে অধীর ভাবে ক্রন্দন
করিতে লাগিলেন এবং পরে শোকাবেগ কিছু কমলে তিনি সেই ব্যাধকে বললেন নিশ্চিৎ আমার ছেলের আয়ু ফুরিয়েছিল তাই সে মরেছে- এই সাপটিকে মারলে আমার কি লাভ হবে সে তো আর ফিরে আসবে না আমি এই সাপটিকে ক্ষমা করছি - তুমি বাবা ওকে ছেড়ে দাও। ইহা শ্রবণে ব্যাধ বলিল মা ইহাকে ছেড়ে দিলে এ আরো কত লোকের প্রাণনাশ করবে সুতারাং ইহাকে বধ করাই সঙ্গত।
ব্যাধের এ কথা শ্রবণে সাপটি বললো ভাই বলোত এতে আমার দোশ কি? আমি তো সকলকেই দংশন করছি না -

এক্ষেত্রে মৃত্যু দেবতা আমাকে প্রেরণ করেছেন এবং তার আদেশেই আমি এই কাজ করেছি। এই ছেলেটিকে দংশন করার জন্য যদি কেহ দায়ী হয় তাহলে মৃত্যুদেবতাই দায়ী আমার কোন দোষ নাই।
এমন সময়ে মৃত্যুদেবতা সেখানে এসে উপস্থিত হলেন এবং তিনি বললেন যে ছেলেটির মৃত্যুকাল উপস্থিত হয়েছিল বলেই আমি তোমাকে পাঠিয়েছি ওকে দংশন করার জন্য এতে আমার বা কি দোষ? যদি কারুর সত্যই দোষ থাকে তাহলে

সে দোষ হচ্ছে কালের। কারণ আমরা সকলেই কালের অধীন।
এমন সময় কাল এসে উপস্থিত হলেন এবং বললেন এ বালক পূর্ব্ব জন্মে যেইরূপ কর্ম করেছে এই জন্ন্মে সেইরূপ ফলভোগ করছে কারণ সকলেই কর্মের অধীন।
ইহা সব শ্রবণে সন্তান হারা গৌতমী বললেন বৎস আমার

ছেলে তার পূর্ব জন্মের কর্মনুযায়ী ফল ভোগ করছে এবং আমিও পূর্ব জন্মের কর্ম্মফলের দোষে এই পুত্র শোক ফেলাম। পূর্ব্বজন্মে যে যেরূপ কর্ম করে পর জন্মে সে সেরূপ ফলভোগ করে কিছুতেই এর অন্যথা হয় না। অতএব হে ব্যাধ, বাবা, তুমি সাপটিকে বধ করো না ওকে ছেড়ে দাও। অতএব সেই ব্যাধ তখন মুক্তি দিল। ধর্ম্মপরায়ণা গৌতমী তাঁর ক্রমে ক্রমে পুত্রশোক ভুলে গেলেন।।
হরে কৃষ্ণ।।

Post a Comment

0 Comments