মহিলারা কেন উলুধ্বনির করে, পুরুষেরা কেন করে না, কিভাবে মর্তলোকে উলুধ্বনির প্রচলন হল?? বৈষ্ণব শাস্ত্রমতে


মহিলারা কেন উলুধ্বনির করে, পুরুষেরা কেন করে না, কিভাবে মর্তলোকে উলুধ্বনির প্রচলন হল??

বৈষ্ণব শাস্ত্রমতে এক উপকথা থেকে আমরা জানতে পারি,

একটি ছোট্ট জঙ্গলের মধ্যে এক দরিদ্র ব্রাক্ষ্মন এবং তার কন্যা বসবাস করতেন।ব্রক্ষ্মন ছিলেন বিষ্ণু দেবের এক নিষ্ঠ ভক্ত। তিনি সরল মনে এবং নিষ্ঠার সঙ্গে শালগ্রাম শিলাকে পুজা করতেন। ছোটবেলা থেকে ব্রাক্ষ্মণ কন্যা পিতাকে বিষ্ণু দেবের পুজায় নিয়োজিত দেখে নিজেকেও তার চরনে সমর্পন করেন।প্রত্যেকদিন পুজা করে পাপ্য সামন্য অর্থ মিলেই তাদের অন্ন সংস্থান হত এবং দিন চলত।এভাবে ব্রাক্ষ্মণ কন্যা ধীরেধীরে বালিকা থেকে যুবতীতে পরিনত হল।সে ক্রমে একেবারে অনন্যা হয়ে উঠল।একদিন এই জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল এক রাক্ষস রাজা।এই কন্যাকে দেখে তার ভিষনভাবে পছন্দ হয়ে যায় এবং তাকে অপহরন করে নিয়ে যায় তার রাজ প্রসাদে।বলপূর্বক তাকে বিয়েও করে ফেলে।রাজা একটি শর্ত ছিল,রানী এখন রাক্ষস বংশীয় হওয়া সে কোন রকম দেবতার পুজা অর্চনা বা উপসনা করতে পারবে না।এই শর্তের অধিনস্ত হয়ে রানী প্রত্যেকদিন নারায়ন শীলার সামনে অশ্রু বিসর্জন করত এবং তার ভাগ্যকে কটাক্ষ করত।এমন একদিন রাজা এসে বলল সে কিছু দিনের জন্য রাজ্য বাহিরে যাবে।এই সময় যেন রানী কোন রকম দেবতার উপসনা না করে।এই সুবর্ন সুযোগ দেখে রানী খুশি হল।রাজা চলে গেলে নারায়ন শীলাটিকে বাহিরে বের করে তাকে পুষ্প চন্দন দিয়ে সাজিয়ে পুজা করতে শুরু করল।চারিদিকে নারায়ন মন্ত্রের গুঞ্জন ধ্বনি হতে লাগল।এইভাবে কিছুদিন যেতে না যেতেই রাজা পুনরায় রাজ্য ফিরে এল এবং দেখল এখানে নারায়ন পুজা করছেন রানী।এই দৃশ্য দেখা মাত্র আদেশ দিলেন নারায়ন শীলাটিকে গঙ্গা বিসর্জন দিয়ে আসতে।রানী তখন বাধ্য হয়ে নারায়ন শীলাটিকে মাথায় নিয়ে গঙ্গার পথে রহনা দিলেন।যাওয়ার পথে মন স্থির করলেন তিনি নিজেকেও গঙ্গার বুকে বিসর্জন দেবেন এবং মনে মনে গঙ্গা মায়ের কাছে এই দুই বিসর্জনের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলেন।এইভাবে হাটতে হাটতে তিনি নদীর তীরে পৌছিয়ে প্রথমে হাটুজল,তারপর কোমরজল এবং অবশেষে একেবারে বুকজলে দাড়ালো।এই সময় তিনি হঠাৎ পিছনে থেকে শুনলেন একটি দৈব্যবানী ঘোষনা করা হচ্ছে।সেখানে বলা হয়েছে, কন্যা তুমি শীলাটি নিয়ে আবার পুনরায় তোমার গৃহে ফিরে যাও।আমাকে যদি একান্ত পুজা নিবেদন করতে হয় তাহলে কোন রকম মন্ত্র ছাড়াই শুধু মাত্র কয় একবার উলুধ্বনি করলেই আমি পুজা গ্রহন করব।নারায়ন দেব আরো বললেন নারীজাতি শুধু মাত্র উলুধ্বনি মাধ্যমে পুজা অর্পন করতে পারবে।এই কথা শুনে ব্রাক্ষ্মণ কন্যা পুনরায় প্রসাদে ফিরে গেল এবং আজীবন উলুধ্বনির মাধ্যমে নারায়নের পুজা অর্চনা করল।অবশেষে তার মৃত্যুর পর নারায়ণে শীচরনে ঠাই পেল।

এরপর থেকে মর্তলোকে উলুধ্বনি প্রচলন হল। আর নারীদের মন্ত্র পরার কোন বাধ্য বাধকতা নেই। শুধুমাত্র উলুধ্বনির তে সকল দেবতা পুজা গ্রহন করে। আর এই কারনে পুরুষেরা উলুধ্বনি করে না। তারা সর্বকালে স্বাধীন এবং মন্ত্র মাধমে সকল দেবতাকে আহবান করে। আর মেয়েদের অসীম ক্ষমতা শুধুমাত্র উলুধ্বনির মাধমে মন্ত্র ছাড়াই সকল দেবতাকে সন্তুষ্টু করতে পারে। তবে ডিজিটাল মহিলা বা মেয়েরা উলুধ্বনি দিতে লজ্জা বা সংকোচ বোধ করে।

হরে কৃষ্ণ❤️

Post a Comment

0 Comments